আমার দেখা বাস্তবের মধ্যে সবচেয়ে অবাস্তব চরিত্র হচ্ছে হিমু। হিমুকে দেখে মনে হবে অসম্ভব কোনো চরিত্র না।সহজেই ডিফাইন করা যায়। আপনার মনে হবে আপনি একটু চেঞ্জ আনলেই নিজে হিমু হতে পারবেন। কিন্তু বিশ্বাস করুন, আপনি কখনই হিমু হতে পারবেন না। পারলেও আপনি হবেন সমাজবিচ্ছিন্ন।
উপন্যাসের হিমু চরিত্রটা এমনি এমনি তৈরি হয় নি। হুমায়ূন আহমেদ অনেক আস্তে আস্তে চরিত্রটাকে বিল্ড আপ করেছেন। হিমুর হিমু হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা তার বাবার।
আসলে হিমুর বাবা ওয়ান কাইন্ড অব সাইকোপ্যাথ। সব বাবার স্বপ্ন থাকে,ছেলে হবে ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার। অথচ হিমুর বাবার স্বপ্ন ছেলে হবে মহামানব।আর এর জন্য যা যা দরকার উনি তাইই করেছেন।হিমুর ছোটবেলায় তার মধ্যে থাকা মায়াকে দমানোর জন্য উনি হিমুর প্রিয় জিনিস গুলোকে হিমুর থেকে সরিয়েছেন। তার মাকেও। আর হিমু বড় হয়েছে ভিন্ন এক মানুষ হিসেবে।রূপার মত মেয়েকে ইগনোর করতে পারলেও হিমুর পকেট ছাড়া পাঞ্জাবী পড়া,খালি পায়ে ঢাকা শহর ঘুরে বেড়ানো, এগুলো বর্তমান দুনিয়ায় অসম্ভব। আর হিমুর সবচেয়ে বড় ক্ষমতা হচ্ছে তার 'ইনট্যুইনশন' ক্ষমতা। যা বাস্তবে খুব কম মানুষেরই থাকে। সব মিলিয়ে আমার যতদূু্র মনে পড়ে ' আজ রবিবার' নাটকে হিমুর একটি চরিত্র ছিল, যেখানে শেষ পর্যন্ত হিমু নিজেই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল আসাদুজ্জামান নূরের জন্য। বলেছিল ওর কাজ শেষ, আজ থেকে ও আর হিমু না।
তাই হিমু হওয়া সহজে সম্ভব না,সহজও না। হিমু আমাদের কল্পনার ছবি, কল্পনাতেই সুন্দর।
লেখক,
ফাইয়াজ মুহাম্মদ কৌশিক,
শিক্ষার্থী,চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।