কোটা সংস্কার আন্দোলন কেবল নির্দিষ্ট কোনো গোষ্ঠীর আন্দোলন বা দাবি ছিল না। দেশের সাধারণ জনগণের প্রাণের দাবির অন্ত্যমিলে এই ছাত্র আন্দোলন রূপ নেয় জনমানুষের আন্দোলনে। প্রাথমিক অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে কোনো দায়িত্বশীল বক্তব্য বা আশ্বাস না আসায় এবং আন্দোলনকে ঘিরে সরকার সংশ্লিষ্ট অনেকের বিবেকহীন উস্কানি এই আন্দোলনের গতিবিধিকে চরম মাত্রা প্রদান করে। ছাত্র-ছাত্রীদের ন্যায্য দাবির এই গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্রলীগের ন্যাক্কারজনক হামলা, পুলিশ-প্রশাসনের নজিরবিহীন অবৈধ বলপ্রয়োগের ফলে আন্দোলনের মাঠ হয়ে ওঠে রণক্ষেত্র। যার ফলে ঝরে গেছে দুই শতাধিক প্রাণ (এখন পর্যন্ত)। মা, বাবা হারিয়েছে তাদের প্রাণপ্রিয় সন্তানকে। বোন হারিয়েছে স্নেহের ভাইকে। বন্ধু হারিয়েছে নিজের আয়নাকে। লাশের গন্ধ তীব্র হয়েছে, পাখি থেকে শুরু করে বৃক্ষরাজি, নদ-নদীসহ সমস্ত প্রকৃতিতেই যেন এই হৃদয়বিদারক মহাকাব্যিক ব্যথা ছড়িয়ে গেছে। শিশুদের বিদেহী আত্মা যেন মহাবিশ্বের প্রতিটি পরতে ছড়িয়ে দিয়েছে এই নির্মমতার কথা।
এরপর বিচারের নামে গণ গ্রেফতার শুরু হলে শিশু থেকে বয়স্ক সকলকেই বসবাস করতে হচ্ছে এক আতঙ্কের পৃথীবিতে। এখানে কেউ স্বাধীন না। এখানে শিক্ষার্থী হওয়াটা কিংবা জন্ম নেয়াটাই যেন আজন্ম পাপ।
মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে এধরণের নিপপীড়ন, নির্মমতা বন্ধ হোক। শিশুরা আবার হাসুক, খেলুক, স্কুলে যাক। বাগানে ফুল ফুটুক শান্তির বার্তা দিয়ে। সাহিত্যনামার লেখক এবং পরিচালনা পর্ষদ এই নির্মমতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং জড়িত সকলের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবি জানাচ্ছে। সেই সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সকল দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করছে।