আমি তোমাকেই খুঁজি হে স্বাধীনতা | রাহুল


আমি তোমাকেই খুঁজি হে স্বাধীনতা

রাহুল


একাত্তরের তেপ্পান্ন বছর পরেও,

স্বাধীনতা আমি তোমায় খুঁজি।

আমি কথা বলতে গেলে আমার গলা চেপে ধরল ওরা,

এরপর বিবৃতি এল-

কেউ কারও গলা চেপে ধরেনি।

আমার গলা নাকি আপনা আপনিই দেবে গিয়ে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম আমি।

আমি স্বাধীনতার আশায় আন্দোলন করলাম,

ওরা আমাদের উপর গুলি করল।

আমার অনেক ভাইবোনকে মরতে দেখলাম চোখের সামনে।

তবে কি অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন করতে পারব না?

সংবিধান তাহলে ভুল?

স্বাধীনতা না পেয়ে আমি ছোট্ট শিশু হয়ে বাবার কোলে আশ্রয় নিলাম,

বাবার কোলে শুয়ে ছিলাম নিজের ঘরেই।

ওরা জানালা দিয়ে গুলি করল আমার মাথায়,

জগতের সবচেয়ে নিরাপদ স্থানেও আমার বেঁচে থাকার স্বাধীনতা হরণ করা হলো।

এরপর আমি পড়তে বসলাম জানালার পাশে,

বন্দুকের গুলি আমার বুকটা বিদীর্ণ করে দিল,

বার বার মরতে মরতে ক্লান্ত হয়ে আমি ভেতর ঘরে গেলাম,

দেখলাম গণমাধ্যমও আজ বিক্রি হয়ে গেছে।

সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাতে লাগলাম আমি,

খুঁজতে লাগলাম স্বাধীনতা।

কিন্তু এখানেও স্বাধীনতা আর কোথায়?

একদল শকুন বলল তারা নাকি আকাশের স্যাটেলাইট থেকে সব দেখছে।

স্যাটেলাইটকে বিকল করে দিল তারা।

এত বছরেও স্বাধীন হতে পারিনি হে বিধাতা,

একদল জানোয়ার এসে গুলি চালায় দিন দুপুরে।

আমার ভাইয়ের লাশ কাঁধে করে দিয়ে এলাম তার পরিবারকে।

প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও আমাদেরকেই দুর্বৃত্ত,দুষ্কৃতকারী বলে খুনের দায় দেওয়া হলো।

বলা হলো আমিই নাকি আমার ভাইকে খুন করেছি।

পুরো দেশ জানে এই জানোয়াররা জাতির সাথে প্রহসন করছে,

কারণ এদের লজ্জা নেই।

শহরের প্রতিটা রাস্তায় ওরা নামিয়ে দিয়েছে হানাদার বাহিনী,

তারা দরজা ঠকঠকিয়ে জিজ্ঞেস করে-

"ঘরে ছাত্র আছে নাকি?"

দেশের প্রতিটা অলিতেগলিতে আমি স্বাধীনতা খুঁজি,

একদল বুদ্ধিজীবীর লেবাসধারী আবার আমার ভাইয়ের হত্যা দেখে চুপ থাকে,

এরাই নাকি দেশের বিবেক!

আজ চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে-

বুকের ভেতর অনেক ঝড়,

বুক পেতেছি গুলি কর,

গুলি কর শুয়োরের বাচ্চা!


৩১ জুলাই,২০২৪,বুধবার,সকাল ৯ টা১৩ মিনিট।




#JulyMassacre

#RememberingOurHeroes

Previous Post Next Post