দিগ্বিজয়ের ধ্বনি
আল মাহমুদ
আমাকে বিদীর্ণ করে মাটি ও রক্ত ফুঁড়ে বেরিয়েছে এই নিশান।
তারপর আর ‘আমি’ বলে কিছু নেই।
না, আমরা অর্থাৎ এই সবগুলো নদী, এই সবগুলো মানুষ, এই সবগুলো পাখি পতঙ্গ পরিবেশ।
এই তো আমরা। আমাদের অস্তিত্বের ভেতর থেকে লক্ষ লক্ষ মসজিদের মিনার।
কলরবমুখর হয়ে উঠেছে এই নীলিমা, চন্দ্র সূর্য তারকারাজি
আমাদের আযানই তো আমাদের স্বাধীনতা।
আমাদের সিজদা-ই তো প্রকৃতপক্ষে মনুষ্যত্বের জয়গান।
বলো কতদিন ধরে আমরা হাঁটছি, কত কাল কত যুগ?
শিকলের ঝনৎকার বয়ে নিয়ে আমারা সবগুলো নদী পার হয়ে এসেছি
সবগুলো স্রোতস্বিনী। কিন্তু পারাপারে তো আমাদের দাসত্ব ঘোচেনি
আমাদের অন্তরাত্মা না না করেছে
কিন্তু দাসত্বের ঝনৎকারকে আমরা কখনোই চমৎকার বলতে পারি না।
তারপর আমরা নিজেরাই নিজেদের রক্তে তৈরি নদী অতিক্রম করে
দেখি ভোর হয়েছে। সেটা ছিল ঊষার উদয়কাল
এক অলৌকিক আযান ভেসে এলো আমাদের সত্তার ভেতর দিয়ে
আর খসে পড়ল সমস্ত শিকলের ঝংকার বন্ধন এবং বেদনা
তাহলে কি আকাশের দিকে মুখ তোলা ঐ মোয়াজ্জিনের আহ্বানের মধ্যেই মানুষের মুক্তি উচ্চারিত হচ্ছে না?
এসো সিজদায় লুটিয়ে পড়ি।
তারপর শুরু হোক আমাদের অফুরন্ত গতি
আমাদের কি কোনো শেষ আছে?
আমরা আমাদের দৃষ্টি দিগন্তে দিকে মেলে ধরেছি
দাড়ি নেই, কমা নেই, নেই কোনো সেমিকোলন
আমরা সমস্ত দৃশ্যপট অতিক্রম করে আমাদের গন্তব্যে গিয়ে পৌঁছবো।
কে আমাদের মধ্যে ভয়ের গুঞ্জন তুলতে চায়?
আমাদের কারো পোশাকে তো কোনো কাপুরুষতা ও ভীরুতার চিহ্ন ছিল না।
যারা ঘর্মাক্ত তারা বিশ্রাম নিক
সবগুলো শব্দ অতিক্রম করে এই মিছিল দিক চক্রবাল ফুঁড়ে বেরিয়ে যাক
আযানের দিকে
আহ্বানের দিকে
বিজয়ের দিকে
Tags:
বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা