মূলঃ ইমাম গাজালি (আবু হামিদ
আল গাজালি) (১০৫৭-১১১১)
ক্বুল লি-ইখওয়ানি রা’উনি
মাইয়্যিতা (Deathbed)
ভাবানুবাদঃ মো. রিদওয়ান আল
হাসান
আমি মারা গেলে-
আমায় দেখতে আসা ভাই কিংবা,
শোকাহত বন্ধুদের জানিয়ে দিয়ো-
যে মড়া তারা দেখছে, তা আমি
নই।
যা দেখে তারা দুঃখ পেয়ে
কাঁদছে-
খোদার কসম, আমি ঐ লাশ নই।
তারা ভাবছে আমি ঐ মৃতদেহ-
যা তারা কবরে নামাবে কিছুক্ষন
পর।
তাদের সেই ভাবনা নিতান্তই
ভুল।
খোদার কসম, আমি ঐ লাশ নই।
আমি ছিলাম মর্মী এক আত্মা-
যার সাময়িক বসবাস ছিল নশ্বর
এই দেহে,
আর তোমাদের মতো পোশাক পরে-
ঘুরে বেরিয়েছি সেই আত্মা
লালন করে।
আমি এক সম্পদ, লুকানো এক
ঐশ্বরিক পুঁজি,
এতদিন কাঁদামাটির এই দুনিয়ায়
ভুগেছি অনেক।
কষ্ট পেয়েছি, পেয়েছি যন্ত্রণা,
নক্ষত্রের মীমাংসিত সত্য
বুকে নিয়ে যাতনার ভার বয়েছি একা।
এই বন্দিশালা- এই খাঁচা থেকে
মুক্তি পেয়ে-
জীবনানন্দের রোমাঞ্চে আমি
উড়ে যাবো –
অমরাবতীর ডাইমমেনশনে।
মৃত্যুশয্যায় আমার এই খাঁচা
দেখে-
বিভ্রাট যেন জন্ম না নেয়
তোমাদের মনে!
তোমাদের ভিড়েই বরং আমি ছিলাম মৃত-জিন্দালাশ,
‘জাহেরি হায়াত মুর্দাবাদ’
স্লোগানে আজ তাই,
রিয়ার প্রহেলিকায় কোণঠাসা
রূহের খালাস।
শিকল-জঞ্জাল থেকে পার্মানেন্ট
বেইলে আজ-
আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়ার
ভাষা আমার জানা নাই।
আজ আমি সেই জীবন পেয়েছি,
যার আশায়, যার আকাঙ্ক্ষায়
আমি হাজার বছর কেঁদেছি।
আজ আমি এমন হায়াত পেয়েছি,
যার চিরায়ত রূপে সাজতে তোমাদের
জগৎ থেকে মরেছি।
তাই, আজ আমার ইদ,
আমার ইদে তোমরা কাঁদছো কেন?