ফাইয়াজ মুহম্মদ কৌশিক
বড় হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এসে আমার একটা বড় রিয়েলাইজেশন হচ্ছে- পৃথিবী একটা "আনফেয়ার" জায়গা। কিন্তু এর অপর পিঠটা আবার "ফেয়ার"। আমরা জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এ দুটো পরিণামেরই মুখোমুখি হই।
নিজেকে দিয়েই উদাহরণ দেয়া যায়। আমার স্কুল আর কলেজ জীবনে অনেক ফ্রেন্ড দেখসি। প্রচুর ম্যাথ করত। সারাদিন ফিজিক্স বই নিয়ে পড়ে থাকত। আমার এসইউ আহমেদ এর বই নিয়ে যখন টানাটানি, ওদের দেখতাম কেতাব উদ্দীন শেষ। কিন্তু এডমিশনে এসে দেখি ওরা বুয়েট,কুয়েট, রুয়েট, চুয়েট কোথাও চান্স পায় নাই। ব্যাপারটা আমার কাছে আশ্চর্যজনক ছিল। কিন্তু মেডিকেলে জোর দিয়ে প্রিপারেশন নিয়ে আমি চুয়েটে এসে পড়সি। এই যে ওরা পায় নি, এটা ছিল ওদের জন্য আনফেয়ার। খুবই আনফেয়ার। আর ওদেরই শূন্যস্থানে আমি পেয়ে বসে আছি, এটা আমার কাছে ফেয়ার।
আবার আমার বর্তমান জীবন নিয়েও কথা বলতে পারি। সারারাত সিটির প্রিপারেশন নিয়েও দেখা যায় আমি সিটিতে ৫-৭, আবার আমার বন্ধু আমার থেকে কম পড়েও, ২০/২০।
আমাদের জীবনে প্রতিনিয়ত এমন আনফেয়ার occurance গুলো ঘটে থাকে। আমরা চাইলেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। মানতেও পারি না। যখন আনফেয়ারের উল্টোপার্ট ফেয়ারটা পাই, আহ্লাদে আটখানা হয়ে উঠি। জীবনের সবটুকু ইফোর্ট কারো জন্য জমা করে রাখি, তার কাছে সেটা তুচ্ছ হয়ে উঠে। অথচ বিনা ইফোর্টে অন্য কেউ তাকে পেয়ে যায়।
সৃষ্টিকর্তা আসলে সবকিছু ব্যালেন্স করেন। সবকিছু! তার হিসাব আলাদা। তিনি সবকিছুকে কির্শফের প্রথম সূত্রটা এপ্লাই করান। আনফেয়ার যা ঘটে, কোনো একদিন কোনো এক অবসন্ন বিকেলে তিনি ফেয়ার দিয়ে আমাদের sum of equation জিরো করে ফেলেন।
কিন্তু জীবনে হাজারো আনফেয়ার এর যাতাকলে পড়ে কেউ কেউ সময়ের গহ্বরে হারিয়ে যায়। কেউ একা একা কথা বলে রাস্তার ধারে। সমাজে আমরা যাদের পাগল, ছিন্নমূল হিসেবে অভিহিত করি। কেউবা ফিরে আসে। মাঝেমধ্যে মন খারাপ হলে তাই আমি মেটাল ইরোর এর "শূন্যতা" গানটা শুনি-
"শূন্যের এ জগতে আমি এসেছিলাম শূন্য হাতে,
পাই নি কিছুই, শূন্যতা ছাড়া"
লেখক,
শিক্ষার্থী, পুরকৌশল বিভাগ,
চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।